গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মসজিদে জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করায় পুরষ্কার স্বরুপ ৯ জন নামাজীকে বাইসাইকেল উপহার।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মসজিদে জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করায় পুরষ্কার স্বরুপ ৯ জন নামাজীকে বাইসাইকেল উপহার।
ব্যতিক্রমি উদ্যোগ মানুষকে যেভাবে করে আলোচিত ও আলোকিত, ঠিক তেমনি সমাজ সংস্কার বা কোন ভাল উদ্যোগ মানুষকে করে রাখে স্মরনীয়৷
এমনই একজন উদ্যোক্তা সামান্য বেতনে জীবন জীবিকা নির্বাহকারী প্রত্যন্ত পল্লীর একটি মসজীদের পেশ ইমাম মাওঃ সোহরাব আলী। তিনি রংপুর সদর উপজেলার পালিচরা গ্রামের বাসিন্দা ৷
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, কোন বিবাহিত পুরুষ যদি একটানা চল্লিশ দিন জামায়াতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন, তাদের ১০,০০০ টা পুরস্কার (অনুপ্রেরণা যোগানোর জন্য) এবং কোন অবিবাহিত পুরুষ যদি একটানা ৪০ দিন জামায়াতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন তাদের একটা বাই সাইকেল পুরস্কার দেওয়ার হবে (অনুপ্রেরণা যোগানোর জন্য)। যদিও কোন বিবাহিত পুরুষ এই অনুপ্রেরণা মূলক পুরস্কার বিজয়ী হতে পারেনি তবে অবিবাহিত ৯ জন বিজয়ী হয়েছেন। তিনি মসজিদে নিয়মিত জামায়াতের সহিত ৪০ দিন নামাজ আদায় করার জন্য অত্র মসজিদের মুসুল্লিদের মাঝে বাই সাইকেল প্রদান করে আলোড়ন সৃষ্টি করলেন।
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৫নং মহদীপুর ইউপি'র বুজরুক বিষ্ণপুর গ্রামের পূর্বপাড়া জামে মসজিদ এর ইমাম একটি ব্যতিক্রমি উদ্যোগ গ্রহন করেছে ৷ যা অবশ্যই একটি আলোচিত ও দৃষ্টান্ত হিসেবে অত্র এলাকার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে ৷ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ৪০ দিন জামায়াতের সাথে পড়লে উপহার পাবেন একটি বাইসাইকেল ৷ এমন একটি চমকপ্রদ ঘোষনা দিয়ে অত্র এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি ৷ অবশ্য ইমাম সাহেবেরও ধারনা ছিল হয়ত সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩ জন শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগীতায় টিকে থাকবে কিন্তুু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৪০ জনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৯ জন নামাজী প্রতিযোগীতায় টিকে যান ৷ কি আর করনীয়? অবশেষে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইমামকে ৯ টি বাইসাইকেলই উপহার দেন প্রতিযোগীদের ৷
এ পেশ ইমামের সাথে কথা বললে তিনি জানান রাষ্ট্র বা সমাজ বিরোধী ও উষ্কানীমুলক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে এবং সকল ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদেরকে সঠিক পথে নিয়োজিত রাখার নিমিত্তে এ মহতি উদ্যোগ গ্রহন করেন তিনি ৷ মসজিদ হতে প্রাপ্ত বেতন ভাতার অধিকাংশ অর্থ তিনি এভাবে ব্যয় করেন এছাড়াও নেপথ্যে রয়েছে আরো কিছু কারন ৷ তিনি জানান আমার স্ত্রী একজন চাকুরিজীবী ৷ আল্লাহর অশেষ রহমতে দুজনের রোজগারে খুব ভালভাবেই জীবন কেটে যায় ৷ আল্লাহর পথে মানুষকে সঠিক ও সরল পথ দেখানোর জন্য তিনি এলাকার কিশোর ও যুবকদেরকে ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলার মাঝে নিয়োজিত রাখেন ৷
মসজিদ কমিটির সভাপতি শাহারুল ইসলাম মনা বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি অনুরোধ এমন সুন্দর চরিত্রের ইমামদের কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে তাদেরকে উৎসাহী করার ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় কিনা? এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ৷ স্বীকৃতি না পেলে একসময় উদ্যোগীরাও উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে ৷ এ রকম ব্যতিক্রমি উদ্যোক্তা ইমামদের জন্য কোন প্রণোদনার ব্যবস্থা গ্রহন করার ব্যবস্থা করতে পারলে প্রত্যেক মসজিদে এমন সুন্দর পরিবেশ ফিরে আসবে বলে এলাকাবাসী মনে করেন ৷ এভাবেই পর্যায়ক্রমে সমাজ ও রাষ্ট্র উভয়ই শান্তি ও সুশৃংখলা থাকবে ৷ সমাজ তথা দেশ জুড়ে পরিবর্তন হবে মানবিকতা ও সহানুভুতিশীলতা । এমন সুন্দর একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন হওয়ায় পেশ ইমাম কে শুভেচ্ছা ও
অভিনন্দন
জানিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক পেশাজীবী সংগঠন গুলো।মহান আল্লাহ ইমাম সাহেবসহ, সকল মুসল্লী, গ্রামবাসী তথা সমগ্র মুসলিম উম্মাহ কে কবুল করুন।
No comments